ভালো লাগা থেকে ভালোবাসার টানে কিংবা পরিবারের আয়োজনেই বিয়ের বন্ধনে জড়ায় নারী-পুরুষ। দাম্পত্য সুন্দর কাটুক, সব বিবাহিতই সেটা চান। কিন্তু ছোট ছোট বিষয় নিয়েই হয়তো সম্পর্কটা তিক্ত হতে শুরু করে, আর যার ইতি টানা হয় বিচ্ছেদে। অথচ একটু চাইলেই কিংবা সামান্য সচেতন হলেই এ দাম্পত্যকে চমৎকারভাবে দীর্ঘস্থায়ী করা যায়। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে দাম্পত্য দীর্ঘমেয়াদি করার গোপন কিছু রহস্য।
কথা বলুনজীবনে ব্যস্ততা তো থাকবেই। অফিসের কাজ, নিজের কাজ, এদিক-সেদিক বেড়াতে যাওয়া কিংবা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সময় কাটানো নিয়ে ব্যস্ত জীবন সবার। কিন্তু এই ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে সঙ্গীকে অবহেলা নয়। দিনে অন্তত ১৫ মিনিট সময় হলেও রাখুন আপনার সঙ্গীর জন্য। তাঁর সঙ্গে কথা বলুন, সারা দিনের সবকিছু জানানোর চেষ্টা করুন, নিজেও জেনে নিন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এই কথোপকথন বা তথ্যের আদান-প্রদান খুবই জরুরি দীর্ঘ দাম্পত্যের জন্য।
শ্রদ্ধা ও সম্মান রাখুন
সঙ্গীর প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা ও সম্মান রাখুন। সব সময় মনে রাখবেন, বিয়ে করেছেন বলেই তাঁর সবকিছু আপনার হয়ে যায়নি। তাঁরও নিজস্ব একটি জগৎ আছে। সেই জগতে তাঁকে কিছুটা নিজের মতো থাকতে দিন। সঙ্গীর কোনো আচরণে বিরক্ত হলে অন্যের সামনে তাঁর ওপর ছড়ি ঘোরাবেন না। তাঁর অনুভূতি ও সিদ্ধান্তগুলোর প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখানোর চেষ্টা করুন, এমনকি সেগুলোর সঙ্গে আপনি একমত না হলেও।
আপসে জটিলতা কাটে
দাম্পত্যে আপস করার অনীহা দেখা যায় অনেক দম্পতির মধ্যেই। কারণ, তাঁরা মনে করেন আপস মানেই নিজের দুর্বলতা মেনে নেওয়া। ব্যাপারটা মোটেও তেমন নয়। দীর্ঘমেয়াদি সুন্দর দাম্পত্যের জন্য আপস করার গুণটি খুবই কার্যকর। তার মানে এই না যে, সব সময় আপনি আপনার মতামত বা সিদ্ধান্ত থেকে সরে গিয়ে আপস করবেন। সে ক্ষেত্রে আপনার সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা করুন, দুজন মিলে মধ্যবর্তী একটি অবস্থানে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। যুক্তি দিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করুন। আপনার সঙ্গী যদি আপনার চেয়ে ভালো যুক্তি উপস্থাপন করেন, তাহলে তাঁরটা মেনে নিন। দীর্ঘমেয়াদি দাম্পত্যের জন্য এ বিষয়টি খুবই কার্যকর।
আর্থিক বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া
নিজের আর্থিক বিষয়গুলো সম্পর্কে সঙ্গীকে পরিষ্কার ধারণা দিন। আপনার আয় কত, বন্ধু বা কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ধার নিয়ে থাকলে সেই অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে সঙ্গীকে জানান। তাহলে আয়ের মধ্য থেকে কীভাবে পরিমিত ব্যয় করতে হবে, সে ধারণাটা আপনার সঙ্গীর কাছে স্পষ্ট হবে। তিনি অযৌক্তিকভাবে কোনো কিছু আপনার কাছে চেয়ে বসবেন না।
শ্বশুরবাড়ির স্বজনের সঙ্গে আন্তরিক হন
স্বামী-স্ত্রী দুই পক্ষেরই উচিত, নিজেদের শ্বশুরবাড়ির মানুষের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলা। শুধু একজনই শ্বশুরবাড়ির স্বজনের প্রতি আন্তরিকতা দেখিয়ে যাবেন, আরেকজন কিছুই করবেন না; এটি একপক্ষীয় হয়ে যায়। একপর্যায়ে যিনি দিনের পর দিন শ্বশুরপক্ষের স্বজনের সঙ্গে আন্তরিকতা দেখিয়ে যাচ্ছেন, তিনি হতাশায় ভুগতে পারেন। এমনকি তিনি বিরক্ত হয়ে যোগাযোগ বন্ধও করে দিতে পারেন। অথচ, দুই পক্ষেরই যদি শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে আন্তরিকতা থাকে; তাহলে যেকোনো সমস্যা বা সংকটে তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সমর্থন পেতে পারেন তাঁরা।
রোমান্স জিইয়ে রাখুন
বিয়ের কয়েক বছর হয়ে গেছে বলেই দাম্পত্যে আর রোমান্স থাকবে না! এমনটা কখনোই হতে দেবেন না। জীবনে ব্যস্ততা থাকবেই, এ ব্যস্ততার মধ্যেই সঙ্গীর জন্য সময় বের করতে হবে। সঙ্গীর প্রশংসা করুন, তাঁর প্রতি মনোযোগী হন ও গুণগত সময় কাটান। সবকিছুর পরও তিনি যে আপনার জীবনে বিশেষ কেউ, এই অনুভূতি তাঁর মধ্যে জাগিয়ে রাখুন। ফলটা পাবেন হাতেনাতে, সঙ্গী আপনাকেই ভালোবাসবেন।
সূত্র ঃ প্রথম আলো ০৫ মার্চ ২০১৪
আপডেট: ১২:১০, মার্চ ০৫, ২০১৪
|
0 comments:
Post a Comment
পাঠকের মন্তব্য আবশ্যক