Islamic Bangla BD, YouTube channel

Islamic Bangla BD is a different kind of Islamic info channel. We provide all Popular Bangla islamic Historical story , waz , info , Hamd , naat & Islamic songs ,Islamic music video and Islamic historical videos. Be connected with us and enjoy and practice our Islamic Bangla BD channel . , আসসালামু আলাইকুম , আমাদের অনেক দর্শক স্রোতা আছেন যারা ইসলামিক বিভিন্ন তথ্য, ইসলামের সেরা মনিষদের জীবনী , ঐতিহাসিক ইসলামীক শিক্ষনীয় গল্প, মাছলা মাছায়েল , হামদ ও নাতের মিউজিক ভিডিও খুব পছন্দ করেন । সেইসব দর্শক স্রোতাদের কথা চিন্তা করে , রাসুল (সঃ) এর আদর্শকে ধারন করে ইসলামিক বাংলা Islamic Bangla BD চ্যানেল যাত্রা শুরু করে । উপোভোগ ও আমল করুন | আশা করি সব সময় আমাদের সাথেই থাকবেন ও অনুপ্রেরনা দিয়ে যাবেন। ধন্যবাদ সবাইকে If you Like our channel pls click Like, Share & Subscribe . thanks Link https://www.youtube.com/c/IslamicBanglaBD Mixer Bangla songs YouTube Channel . Mixer Bangla songs is a different kind of music taste. We provide all Popular Bangla songs Remix music video and Recreational videos . Be connected with us and enjoy all new music video tracks and Recreational funny videos .Hope you enjoy .Music Can Predict About Your Personality. New entertainment channel আমাদের অনেক দর্শক স্রোতা আছেন যারা বাংলা গানের মিউজিক ভিডিও এবং বিনোদনমূলক ভিডিও খুব পছন্দ করেন । কিন্তু আমাদের দেশের জনপ্রিয় অনেক গায়ক ও গায়িকাদের সুপার হিট গান আছে যার ভালো মিউজিক ভিডিও নাই বা অনেক গানের মিউজিক ভিডিও ভাল লাগেনা । আবার অনেকে আছেন ভিন্ন ধারার/ স্বাদের রিমিক্স ভিডিও খুব পছন্দ করেন আর মজার ভিডিও দেখতে চান সেইসব দর্শক স্রোতাদের কথা চিন্তা করে লাইফ টিভি বাংলা ইউটিউব চ্যানেল তাদের প্রচার শুরু করে। বিনোদনের নতুন চ্যানেল Mixer Bangla songs Channel Link https://www.youtube.com/channel/UCgSBJ2G1mBEsWNxaONWbemg

Thursday, August 3, 2017


সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ একযোগে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন যে ১৯৭৫ সালের চতুর্থ সংশোধনী ছিল সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী। জিয়াউর রহমানের সামরিক ফরমান নয়, বরং চতুর্থ সংশোধনীর দ্বারাই সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে সংসদের ক্ষমতা খর্ব করে বিচারক অপসারণের কর্তৃত্ব রাষ্ট্রপতির কাছে ন্যস্ত করা হয়েছিল। আর সেই ব্যবস্থা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য হুমকি বিবেচনা করে এবং তার তুলনায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে ‘অধিকতর স্বচ্ছ’ পদ্ধতি বিবেচনায় আপিল বিভাগ পঞ্চম সংশোধনীর মামলার রিভিউতে তা মার্জনা করেছিলেন। ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার যে পূর্ণাঙ্গ রায় মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে আপিল বিভাগের সাতজন বিচারপতিই এই পর্যবেক্ষণে একমত পোষণ করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংসদে গৃহীত চতূর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে একদলীয় (বাকশাল) শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।
রায়ে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার সুচিন্তিতভাবে ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি সংবিধানে রেখে দেয় এবং অন্য অনেক বিধানের মতোই ৯৬ অনুচ্ছেদকেও সংবিধানের অপরিবর্তনীয় মৌলিক কাঠামো হিসেবে ঘোষণা করে। তাই জিয়ার সামরিক ফরমান নয়, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে অর্পণের লক্ষ্যে প্রণীত ষোড়শ সংশোধনীটি ছিল পঞ্চদশ সংশোধনীর পরিপন্থী।
বিচারপতি আবদুল ওয়াহাব মিয়া লিখেছেন, সংসদ সদস্যদের নজরে এটাও আনা হয়নি যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু নিজেই চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদ কর্তৃক সুপ্রিম কোর্টের বিচারক অভিসংশনের ক্ষমতা রহিত করেছিলেন। তিনি ওই ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির কাছে ন্যস্ত করেছিলেন।
বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন লিখেছেন, চতুর্থ সংশোধনীর দ্বারা বিচারক অপসারণের প্রক্রিয়া মৌলিকভাবে পরিবর্তিত (মেটারিয়ালি এফেক্টেড) হয়েছিল। কিন্তু চতুর্থ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ না হওয়ার কারণে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে একটি বৈধ সংবিধানের অংশ হিসেবে তা থেকে গিয়েছিল। বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন মনে করেন, চতুর্থ সংশোধনীর চেয়ে পঞ্চম সংশোধনী ‘অধিকতর স্বচ্ছ’ বিবেচনায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তা মার্জনা করেছিলেন। আর সেই মার্জনাসংক্রান্ত রায় সংবিধানের ১১১ ও ১১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাধ্যতামূলক। তাই ষোড়শ সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের লঙ্ঘন ঘটেছে।
বিচারপতি মো. ইমান আলী লিখেছেন, ৯৬ অনুচ্ছেদের বিষয়ে বলা যায়, ’৭২-এর সংবিধান ’৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংশোধিত অবস্থায় ছিল। সে সংশোধনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সংসদ কর্তৃক তৈরি করা হয়েছিল। আর ঘটনাক্রমে সেই সংসদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিচারপতি ইমান আলী লিখেছেন, সরকার পদ্ধতি পরিবর্তন করে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে স্পষ্টতই সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করা হয়েছিল। এটা কৌতূহলপূর্ণ যে, ’৭২-এ সংবিধানে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির কাছে শপথ নিতেন। অথচ চতুর্থ সংশোধন‌ীতে বিধান করা হলো, রাষ্ট্রপতি স্পিকারের কাছে শপথ নেবেন। এরপর সামরিক ফরমান দ্বারা পুনরায় বিধান করা হয় যে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির কাছেই শপথ নেবেন। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আবার শপথ নেওয়ার বিধান স্পিকারের কাছেই ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এর মানে, ’৭২-এর সংবিধানে নয়, তারা ফিরে গেছে চতুর্থ সংশোধনীতে। সুতরাং সংসদের উদ্দেশ্য যদি ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া হয়, তাহলে প্রধান বিচারপতিরই উচিত রাষ্ট্রপতিকে শপথ পড়ানো।
বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী তাঁর রায়ে সামরিক ফরমানগুলো অবিকল তুলে ধরে দেখিয়েছেন, এসব পরিবর্তন গোড়া থেকেই বাতিল বলে গণ্য। কিন্তু আপিল বিভাগ ৩১ ডিসেম্বর ২০১২ পর্যন্ত তাকে মার্জনা করলেও তার ‘বাতিল’ চরিত্রের কোনো হেরফের ঘটেনি। এই পরিস্থিতিতে ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৯৬ অনুচ্ছেদের প্রতিস্থাপন ঘটে। সুতরাং আগের বাতিল বিধানটি বৈধ সংশোধন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর হামলা ১৯৮২ সালে সামরিক ফরমানের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। তবে এখন সন্দেহাতীতভাবে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের একটি বিশ্বাসযোগ্য অঙ্গ।
বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দার উল্লেখ করেছেন, চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা কেবল রাষ্ট্রপতির হাতেই ন্যস্ত করা হয়েছিল। তিনি লিখেছেন, ‘আমি প্রধান বিচারপতির সব পর্যবেক্ষণ, মন্তব্যসহ তাঁর অভিমতের সঙ্গে একমত।’
পঞ্চদশ সংশোধনী ও সংসদের সামর্থ্য
রায়ে প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, শুনানির সময়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনী তাড়াহুড়ো করে পাস করা হয়েছিল, সাবেক আইনমন্ত্রী বিষয়টিতে নজর দেননি। আদালত ওই যুক্তি গ্রহণ করেননি। বিষয়টি সম্পর্কে মন্তব্য চাওয়া হলে তৎকালীন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এই অভিযোগ দুর্ভাগ্যজনক। খুব ভালোভাবে আলাপ-আলোচনার পরই ওই বিধান রেখে পঞ্চদশ সংশোধনী করা হয়েছিল।
প্রধান বিচারপতি ৮১টি সামরিক আইনকে সংসদে পাইকারি হারে গ্রহণ করার জন্য সংসদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এ বিষয়ে শফিক আহমেদ বলেন, এটা সঠিক নয়, এখানে সংসদের সামর্থ্যের প্রশ্ন আসে না।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার রায় ও তাঁর যাবতীয় পর্যবেক্ষণের সঙ্গে তাঁর পরবর্তী ছয় বিচারকের মধ্যে তিনজনই শর্তহীন সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। বাকি তিনজনের মধ্যে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীও অধস্তন আদালতের ওপর রাষ্ট্রপতির নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, ১১৬ অনুচ্ছেদ যেহেতু এই মামলার প্রতিপাদ্য নয়, তাই তাঁরা এ বিষয়ে কোনো পর্যবেক্ষণ দেওয়া থেকে বিরত থাকছেন। অপর বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ না করে পঞ্চম সংশোধনী মামলায় ১১৬ অনুচ্ছেদ সম্পর্কে আপিল বিভাগের আশাবাদের পুনরুল্লেখ করেছেন।
বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী জিয়াউর রহমান ও এরশাদের দুই সামরিক শাসনের সময়ে জারি করা ফরমান ও অধ্যাদেশগুলো নবম সংসদে অবিকল গ্রহণ করার বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণের প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন যে এগুলো এই মামলার বিচার্য বিষয় নয়।
প্রধান বিচারপতি আরও লিখেছেন, ‘আমরা যদি ভিন্ন একটি দৃষ্টিকোণ দেখি, তাহলে এটা নগ্নভাবে ফুটে উঠবে, আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্র যেভাবে তাদের কাজ করা উচিত সেভাবে করতে পারছে না। সুপ্রিম কোর্ট সরকারের এক সিভিল রিভিউ পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে সামরিক আইন কর্তৃপক্ষের দ্বারা প্রণীত অইনসমূহ ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাময়িকভাবে মার্জনা করেছিলেন। আদালতের আদেশে বলা হয়েছিল, সংসদ যাতে ওই সময়ে সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে পারে এবং আইনগুলোও তৈরি করতে পারে। অথচ সংসদ আদালতের নির্দেশনার লঙ্ঘন কিংবা আদালতের নির্দেশনার তাৎপর্য অনুধাবন করা ছাড়াই ২০১৩ সালে ৬ নম্বর আইন তৈরি করেছে।’
প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, এর মাধ্যমে তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জারি করা কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর করেছে। বিলে লেখা হয়েছিল, ‘এ সময়ের যত অধ্যাদেশ তা এখন থেকে এমনভাবে কার্যকর থাকবে, যেন তা সংসদের দ্বারা প্রণীত হয়েছে। তবে এভাবে তা গ্রহণ করা হয়েছে বলে তা কোনোভাবেই অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন সামরিক শাসনে কৃত কর্মের সমর্থন করেছে বলে গণ্য হবে না।’ বিলের এই ভাষ্য তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, বিলের ওই বিবৃতি সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, সংসদ আইন প্রণয়নের পরিবর্তে ৮১টি (সামরিক) আইনকে সমর্থন ও অনুমোদন দিয়েছে। একইভাবে তারা ২০১৩ সালের ৭ নম্বর আইনের মাধ্যমে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বরের মধ্যে জারি করা অধ্যাদেশগুলো আইনে পরিণত করেছে। সংসদে আনা বিলে তারা উল্লেখ করেছে, সামরিক শাসনে জারি করা এসব ‘আইনের শাসন ও জনস্বার্থে কার্যকর রাখা হলো।’ ২০১১ সালের ৪৮ নম্বর দেওয়ানি আপিলে আপিল বিভাগ সংসদকে বাতিল করে দেওয়া আইনগুলোকে নতুন করে তৈরি করতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কারণ ওই আইনগুলো ক্ষমতা জবরদখলকারীরা প্রণয়ন করেছিল। এটা পরিহাস যে সংসদ তার দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ অপারগতার পরিচয় দিয়েছে।
তিনি বলেন, অধিকাংশ আইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তার মধ্যে কয়েকটির সঙ্গে মৌলিক অধিকারের বিষয় জড়িত রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি ১৯৮২ সালের অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড রিকুইজেশন অব ইমমুভেবল প্রোপার্টি অর্ডিনেন্সের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, সামরিক জবরদখলকারীদের তৈরি করা আইন যা সর্বোচ্চ আদালত বাতিল করে দিয়েছেন সেগুলো তাঁরা অনুসমর্থন করেছেন। অথচ বাংলাদেশ সংবিধান সংসদকে এভাবে আইন গ্রহণ করতে কোনো এখতিয়ার দেয়নি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আদালতে বসে এসব আইনের আওতায় বিচারকার্য পরিচালনা করতে‌ গিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে বিব্রত বোধ করতে হয়। তিনি বলেন, সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন লাভের আগে তাঁদের বোঝা উচিত সংবিধান নির্দেশিত দায়িত্ব পালন করা তাঁদের পক্ষে আদৌ সম্ভব কি না।
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক৷

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর সরকারে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তাঁর পর্যবেক্ষণে গণতন্ত্র, রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, সুশাসন, দুর্নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপসহ বিভিন্ন বিষয়ে কড়া সমালোচনা করলেও সরকারের কোনো পর্যায় থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে সরকার অনেকটাই বিব্রত। এ নিয়ে নেতা বা মন্ত্রীদের মুখ না খুলতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি দলের একাধিক নেতা এই রায়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে রাজনীতি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ দেশের সামগ্রিক বিভিন্ন বিষয় রায় ও পর্যবেক্ষণে আনা দরকার ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দলের নীতি হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সংসদে জোরালো আলোচনা করা। গত ৩ জুলাই সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশের পর সংসদ অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে কড়া সমালোচনা হয়। সে সময় সমালোচনায় অংশ নেওয়া একজন সাংসদ প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংসদেই কথা বলবেন। আগামী সেপ্টেম্বরে সংসদের পরবর্তী অধিবেশন বসলে সেখানেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
গতকাল বুধবার যোগাযোগ করা হলে আইন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এখনই এ বিষয়ে কথা বলবেন না।
সর্বোচ্চ আদালতের এই রায় নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। তবে আইনজীবী ও বিশিষ্ট নাগরিকদের অনেকেই বিষয়টি স্পর্শকাতর বিবেচনায় এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
গত মঙ্গলবারের পূর্ণাঙ্গ রায় অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অসদাচরণ তদন্ত ও অপসারণের সুপারিশ করার ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতেই ফিরছে। বর্তমান সরকারের সময়ে এই ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে দিতে সংবিধানে ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়েছিল।
মোট ৭৯৯ পৃষ্ঠার এই রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এমন একটি পঙ্গু সমাজে আমরা আছি, যেখানে ভালো মানুষ আর ভালো স্বপ্ন দেখে না, কিন্তু খারাপ লোকেরা আরও লুটপাটের জন্য বেপরোয়া।’ তিনি বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দাম্ভিকতা দেখানোর ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার মতো কোনো নজরদারি বা তদারককারী প্রতিষ্ঠান নেই। এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষারও ব্যবস্থা নেই। নির্বাহী দাম্ভিক নিয়ন্ত্রণহীন হওয়ায় আমলাতন্ত্র কখনোই দক্ষতা অর্জনে সচেষ্ট হবে না।’ তাঁর মতে, মেধা নয়, ক্ষমতার মাধ্যমেই এখন দেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
সামরিক শাসনামলের সমালোচনা করে রায়ে বলা হয়, ‘ক্ষমতালোভীরা দুবার আমাদের রাষ্ট্রকে “ব্যানানা রিপাবলিকে” পরিণত করেছিল, যেখানে ক্ষমতালোভীরা তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য জনগণকে পণ্যরূপে দেখেছে, ধোঁকা দিয়েছে। তারা জনগণের ক্ষমতায়ন করেনি, অপব্যবহার করেছে। তারা নানা রকম ধোঁকাবাজির আশ্রয় নিয়েছে। কখনো ভোটের নামে, কখনো জোরপূর্বক নির্বাচনের মাধ্যমে, কখনো নির্বাচন না করে। এর সবটাই করা হয়েছে তাদের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে। আর এর মধ্য দিয়েই সুস্থ ধারার রাজনীতি পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। এসব অগণতান্ত্রিক শাসনামলের নোংরা রাজনীতির চর্চা আমাদের সার্বিক জনরাজনীতিকে মারাত্মক ক্ষতি করেছে।’
প্রধান বিচারপতির এই অংশের বক্তব্যের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই পর্যবেক্ষণের বক্তব্য আমারও। সুতরাং এ বিষয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রায় সবই ঠিক আছে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, এখন রাজনীতি মুক্ত নয়। এটি বাণিজ্যিক বিষয়। আর অর্থ রাজনীতি পরিচালনা করে। আর সেটিই তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে দেয়। এখন মেধা নয়, ক্ষমতাই সব জনপ্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণকারী।
এ প্রসঙ্গে বিদেশে অবস্থানরত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন-উর-রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, এখানে রাজনীতির বিষয়টি অনেক বেশি সরলীকরণ করা হয়েছে। সবকিছুর মধ্যেও রাজনীতির নিজস্ব ধারা অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, রাজনীতিতে বিত্তের প্রভাব বেড়েছে, ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণও বেড়েছে, এটা সত্য। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের শক্তি এবং বিএনপির নেতৃত্বে আরেকটি শক্তির রাজনীতির মূলধারা কিন্তু বহমান।
পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি তাঁর হতাশার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ও প্রতিরোধের স্পৃহার মাধ্যমে আমরা সামরিক শাসনের থাবা থেকে মুক্ত হয়েছি। কিন্তু পরাজিত হয়েছি স্বাধীন রাষ্ট্রে। এমনকি স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও আমরা আমাদের একটি জনপ্রতিষ্ঠানকেও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারিনি। কোথাও আমাদের ভারসাম্য নেই। তদারককারী নেই। আর এ কারণেই সুবিধাভোগীরা ক্ষমতার অপব্যবহারে উৎসাহিত হন এবং যত্রতত্র ক্ষমতার অপব্যবহারের ধৃষ্টতা দেখান। রাষ্ট্রক্ষমতার যা রাজনৈতিক ক্ষমতার আরেক রূপ, সাম্প্রতিক সময়ে তা গুটিকয়েক মানুষের একচ্ছত্র বিষয়ে পরিণত করেছে। ক্ষমতা কেন্দ্রীভূতকরণের আত্মঘাতী প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। ক্ষমতার লিপ্সা মহামারির মতো, যা একবার ধরলে তা দ্রুত সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। দ্বার্থ্যহীন কণ্ঠে বলতে চাই, এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও উদ্দেশ্য ছিল না। আমাদের পূর্বপুরুষেরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছিলেন, কোনো ক্ষমতাধর দৈত্যের জন্য নয়।’
অধ্যাপক হারুন বলেন, পূর্বপুরুষেরা আগে যে রাজনীতি করেছেন, এখনকার রাজনীতি তেমনই হবে, এটা ভাবার কারণ নেই। এখনকার রাজনীতি উন্নয়নের রাজনীতি। তা ছাড়া বাংলাদেশ ছাড়াও বৈশ্বিক রাজনীতির দিকে তাকালেও দেখা যায়, সেখানেও রাজনীতির গতিপ্রকৃতিতে নানা পরিবর্তন এসেছে।
প্রধান বিচারপতি তাঁর বক্তব্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়ে কথা বলেন। তিনি মত দেন, নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়নি। জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে এবং কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়া স্বাধীনভাবে না হতে পারলে গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া গ্রহণযোগ্য সংসদ প্রতিষ্ঠা হয় না।
নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে এই পর্যবেক্ষণ যথার্থ মনে করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন। গতকাল প্রথম আলোকে তিনি বলেন, কোনো সরকারের সময়ে এমনকি বর্তমান সরকারের সময়েও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারেনি। এর ফলে ইসির টেকসই প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন হয়নি। তাঁর মতে, ইসিকে সহায়তার পরিবর্তে এর ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করা হয়। এর সর্বশেষ দৃষ্টান্ত ২০১৪ সালের নির্বাচন, যেখানে বড় রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ জন নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী হলে এটা হতে পারত না।
প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘মানবাধিকার ঝুঁকিতে, দুর্নীতি অনিয়ন্ত্রিত, সংসদ অকার্যকর, কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা। আর প্রযুক্তির উন্নতির সহায়তা নিয়ে অপরাধের প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ভীষণ রকম ক্ষতিগ্রস্ত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম নয়। এমন পরিস্থিতে নির্বাহী বিভাগ আরও অসহিষ্ণু ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এবং আর আমলাতন্ত্র দক্ষতা অর্জনে চেষ্টাহীন।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই সীমাহীন চ্যালেঞ্জের মুখে বিচার বিভাগই তুলনামূলকভাবে স্বাধীন অঙ্গ হিসেবে কাজ করছে, ডুবতে ডুবতে নাক উঁচিয়ে বেঁচে থাকার মতো। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বিচার বিভাগও খুব বেশি দিন টিকে থাকবে না। এখন পর্যন্ত উচ্চ আদালতের বিচারকদের নির্বাচন ও নিয়োগের কোনো আইন হলো না। নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগের ক্ষমতা সংকুচিত করতে আগ্রহী। আর যদি তা হয় তাহলে এর চেয়ে ধ্বংসাত্মক আর কিছু হবে না।
রায়ে বলা হয়, ‘বিচারক অপসারণের ক্ষমতা যদি সংসদ সদস্যদের হাতে যায়, তবে তার প্রভাব বিচার বিভাগে পড়বে—এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ ছাড়া দীর্ঘদিন সুপ্রিম জুডিশিয়াল ব্যবস্থা অনুপস্থিত থাকায় প্রধান বিচারপতির প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যদি কোনো একজন বিচারকের তাঁর প্রতিষ্ঠানপ্রধানের কাছে জবাবদিহি না থাকে, তবে ওই বিভাগ ধসে পড়তে বাধ্য।’
১১৬ অনুচ্ছেদ প্রসঙ্গ
প্রধান বিচারপতি রায়ে বলেছেন, সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ১১৬ অনুচ্ছেদে সংশোধন আনা হয়, যাতে ‘সুপ্রিম কোর্টের’ স্থলে ‘প্রেসিডেন্ট’ শব্দ প্রতিস্থাপন করা হয়। এর মাধ্যমে জুডিশিয়াল সার্ভিসে কর্মরতদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতির নিয়ন্ত্রণ প্রেসিডেন্টের কাছে ন্যস্ত করা হয়। এ ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে যদিও সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করার বিধান রাখা হয়েছে, তথাপি তা অর্থহীন যদি নির্বাহী বিভাগ সুপ্রিম কোর্টকে সহযোগিতা না করে। তার ওপর এই অনুচ্ছেদ সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। যেখানে বলা হয়েছে, অধস্তন সকল আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হাইকোর্ট বিভাগের হাতে থাকবে। আরও বলা হয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল এটি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন যে চতুর্থ সংশোধনীর আগে অধস্তন সকল আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হাইকোর্ট বিভাগের হাতে ছিল এবং এ বিধান বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের স্থানে প্রেসিডেন্ট শব্দ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে নিম্ন আদালতের স্বাধীনতা পুরোটাই সংকুচিত করা হয়েছে এবং বাদ দেওয়া হয়েছে।
ঐতিহাসিক রায়: বিএনপি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তো মনে করি ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়টি বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ রায়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি একটি ঐতিহাসিক এবং যুগান্তকারী রায়।’
ফখরুল বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ে প্রমাণ হয়েছে, বর্তমান সরকার একটি একনায়কতান্ত্রিক সরকার। এই সরকার সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে দিয়েছে। সংসদকে অকার্যকর করে রেখেছে। কোনো একটি সভ্য দেশের আদালত যদি এই রায় দিতেন, তাহলে এতক্ষণে সরকার ক্ষমতা থেকে সরে যেত। এই রায়ের পর বর্তমান সরকারের আর ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়।
www.bdnewstracker.blogspot.com
প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘আমি ও আমিত্ব’-এর সংস্কৃতির সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সংবিধানের ভিত্তি হচ্ছে, “আমরা জনগণ” সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। জাতীয় সংসদ সংবিধানের পরিপন্থী কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারে না এবং কোনো আইন সংবিধানসম্মত কি না, তা বিচার করার অধিকার সংবিধান সুপ্রিম কোর্টকেই দিয়েছে।’ ষোড়শ সংশোধনীকে সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় ঘোষণা করেছেন, তার পূর্ণাঙ্গ রায়ে প্রধান বিচারপতি এসব কথা লিখেছেন। গতকাল এই রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা লিখেছেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা যে অলঙ্ঘনীয় ঐক্য গড়েছিলাম, তা শত্রুরা নস্যাৎ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। আজ আমরা একটি মুক্ত, স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে বাস করি। অথচ আজ ঔদ্ধত্য এবং অজ্ঞতাকে আমরা প্রশ্রয় দিয়ে চলছি। কোনো একজন ব্যক্তি দ্বারা কোনো একটি দেশ বা জাতি তৈরি হয়নি। আমরা যদি সত্যিই জাতির পিতার স্বপ্নে সোনার বাংলায় বাঁচতে চাই, তাহলে এই আমিত্বর আসক্তি এবং আত্মঘাতী উচ্চাভিলাষ থেকে আমাদের মুক্ত থাকতে হবে। এই আমিত্ব হলো কেবল এক ব্যক্তি বা একজন মানুষ সবকিছুই করতে পারেন এমন ভাবনা।’
আপিল বিভাগের সাতজন বিচারপতির মধ্যে পাঁচজন বিচারপতি প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একমত পোষণ করার পরও আলাদা করে নিজেরা পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বলে প্রতীয়মান হয়। তবে বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা প্রধান বিচারপতির রায়ের সঙ্গে সহমত পোষণ করে তার বাইরে আর কিছু লেখেননি।
তিনি লিখেছেন, ‘আমরা যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নগর–পরিকল্পনার দিকে তাকাই, তাহলে দেখি যেই ব্যক্তি তাদের নগরের পরিকল্পনা করেছেন, তাঁকেই তারা স্বীকৃতি দিয়েছে। দাসপ্রথা বিলুপ্তির জন্য আব্রাহাম লিংকনের স্ত্রী মেরি টড স্বীকৃতি পেয়েছেন। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আরও অনেকে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজন জেনারেলও রয়েছেন। কিন্তু আমাদের দেশে একটি রোগ আমাদের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে। আর সেই রোগের নাম “অদূরদর্শী রাজনৈতিকীকরণ”। এটা একটা ভাইরাস এবং দুর্ভাগ্যবশত আমাদের সংস্কৃতিকে তা এমন বিস্তৃতভাবে সংক্রমিত করেছে যে আমাদের নীতিনির্ধারকেরা এমন একটি ভবিষ্যৎ দেখতে বা কল্পনা করতেও পারছেন না যে ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পুরো জাতি, কোনো একজন ব্যক্তি নন।’
প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, ‘এই বাজে রোগের কারণে নীতিনির্ধারকেরা সবকিছু ব্যক্তিকরণ করে ফেলেছেন। তাঁরা তাঁদের ক্ষুদ্র এবং সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে একটি ভুয়া ও “মেকি গণতন্ত্র” প্রতিষ্ঠা করেছেন। আর এটা তাঁরা লজ্জাজনকভাবে আমাদের সংবিধানের অন্যায্য সুবিধা নিয়ে করেছেন। অথচ ১৯৭১ সালে আমাদের শহীদেরা রক্ত দিয়ে এ সংবিধান লিখেছিলেন। আমাদের অবশ্যই এই নোংরা “আমাদের লোক” মতবাদ পরিহার করতে হবে। পরিত্যাগ করতে হবে এই আত্মঘাতী “আমি একাই সব” দৃষ্টিভঙ্গি। দলীয় আনুগত্য বা অর্থবিত্ত নয়, জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠান তৈরিতে শুধু মেধার বিবেচনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
প্রধান বিচারপতি এক-এগারো সম্পর্কে লিখেছেন, ‘দুই বছরের জরুরি অবস্থার নামে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আর সেটা ঘটেছিল সেই সময়ের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের দূরদর্শিতার অভাব এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে তাদের অনীহার কারণে।’ ত্রয়োদশ সংশোধনীর বিষয়ে প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে আপিল বিভাগ মত দি‌য়েছিলেন যে দুটি সংসদীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে। তবে শর্ত হলো, বিলুপ্ত হওয়া ৫৮(ক) অনুচ্ছেদের ৩ ও ৪ দফা অনুযায়ী সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কিংবা আপিল বিভাগের সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা পদে নিয়োগ করা যাবে না। এই আদালত উল্লিখিত নির্দেশনা এ কথা মনে রেখে দিয়েছিলেন যে প্রধান বিচারপতির নিয়োগপ্রক্রিয়ায় তাহলে রাজনৈতিকীকরণের সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে।’
নির্বাচন যাতে সর্বদাই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে, সে জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আরও বেশি ক্ষমতা এবং তার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে হবে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, ‘এই আদালত লক্ষ করেছেন যে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল যারাই নির্বাচনে হেরে যায়, তারা নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এং বিরোধী দল সংসদে সহযোগিতা করে না। শেষ পর্যন্ত দশম সংসদ নির্বাচনে একটি বড় রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি। এই আদালতের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সব ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা। সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই নির্বাচন কমিশনের শূন্য পদগুলো স্বয়ংক্রিয়ভবে পূরণ হবে। কিন্তু পরবর্তী সরকারগুলোর কেউ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি বিরোধী রাজনৈতিক দলও সংসদে কিংবা কোনো ফোরামে এই প্রশ্ন তোলেনি এবং তার ফল দাঁড়িয়েছে, নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ঘটেনি।’
রায়ে প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি নিরপেক্ষভাবে এবং কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই স্বাধীনভাবে না হতে পারে, তাহলে গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অনুপস্থিতিতে একটি গ্রহণযোগ্য সংসদও প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। সে কারণে আমাদের নির্বাচনপ্রক্রিয়া এবং সংসদ শিশু অবস্থায় রয়ে গেছে। জনগণ এ দুটি প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা অর্পণ করতে পারছে না। এ দুটি প্রতিষ্ঠান যদি জনগণের আস্থা এবং শ্রদ্ধা অর্জনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ থেকে বিরত থাকে, তাহলে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অভাবে বিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের দিয়ে সংসদ গঠিত হতে পারে না, বরং তা সংসদের নিজের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণকে ব্যাহত করতে পারে।’
রায়ে বলা হয়েছে, ‘সংসদ যদি যথেষ্ট পরিপক্বতা অর্জন না করে, তাহলে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ করার ক্ষমতা সংসদের কাছে ন্যস্ত করা হবে একটি আত্মঘাতী উদ্যোগ। সংসদের কাছে বিচার বিভাগের জবাবদিহি করা উচিত নয়; বরং রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত হবে জাতীয় নির্বাচনে তাদের প্রার্থী বাছাইয়ে সতর্ক হওয়া। যেসব দেশে বিচারপতিদের সংসদীয় অভিশংসনের ব্যবস্থা রয়েছে, সেসব দেশের গণতন্ত্র আমাদের তুলনায় বয়ঃপ্রাপ্ত হলেও সেখানে ওই ব্যবস্থা কার্যকরভাবে প্রয়োগ সম্ভব হয়নি।’
রায়ে উচ্চ আদালতের বিচারক, নির্বাচন কমিশনার, মহাহিসাব নিরীক্ষক, পিএসসির সদস্যসহ সব সাংবিধানিক পদধারীকে অপসারণ–সংক্রান্ত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবনের জন্য এখন সংসদের আর কোনো পদক্ষেপ প্রয়োজন হবে না। অষ্টম সংশোধনীর বৈধতার মামলার রায়ের আলোকে এটি আপনাআপনি কার্যকর হয়ে গেছে। সুপ্রিম কোর্ট একই সঙ্গে বিচারকদের অসদাচরণের কোনো প্রাথমিক অভিযোগ এলে তা প্রথমে প্রধান বিচারপতি এবং তাঁর পরের দুই জ্যেষ্ঠ বিচারককে নিয়ে তদন্ত করে সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য সম্মতি চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রেরণের বিধান করে নতুন আচরণবিধি করেছেন।’
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তি খণ্ডন করে বলেন, ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ইতিপূর্বে আপিল বিভাগ স্থায়ীভাবে মার্জনা করেনি, এ যুক্তি সঠিক নয়।’ তিনি আরও বলেন, এটিই একমাত্র সামরিক আইন দ্বারা তৈরি বিধান নয়, যা এই আদালত অনুমোদন করেছেন। দৃষ্টান্ত হিসেবে তিনি ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন, পঞ্চম সংশোধনীতে আনা জাতীয়তার পরিচয় বাংলাদেশি করা, সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহ যুক্ত করার কথা উল্লেখ করেছেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘১৯৮৮ সালের রাবার স্ট্যাম্প সংসদে আনা, ২(ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ১৯৭২ সালের সংবিধানে ছিল না। ’৭২-এর সংবিধানের অন্যতম রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের প্রত্যক্ষ সংঘাত রয়েছে, তারপরও তাকে সংবিধানে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এভাবে ধর্মীয় একটি অভিমন্ত্রে ধর্মীয় ভাবাবেগকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে, যা আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ও চেতনার সরাসরি বিরুদ্ধে। ১৯৭৯ সালে একটি সামরিক সরকার সংবিধানে এটি প্রতিস্থাপন করলেও পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংসদ তাকে বৈধতা দিয়েছে। সে কারণে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সম্পূর্ণরূপে পরাস্ত হয়েছে। আর এভাবে ’৭২-এ সংবিধানে বর্ণিত স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং মূল সংবিধানের চেতনা সমাহিত করা হয়েছে। অথচ অ্যাটর্নি জেনারেল যুক্তি দিয়েছেন, সামরিক আইনের কণামাত্রও সংবিধানে থাকতে পারবে না।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, যার সুরক্ষায় শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। তাই অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেগপূর্ণ যুক্তি গ্রহণ করতে আমরা অক্ষম। এটাও স্বীকৃত যে উভয় পক্ষ স্বীকার করেছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা মৌলিক কাঠামো, আর মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করা যায় না। আর এই আদালত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার স্বার্থে সুরক্ষা দিয়েছেন।’
প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী মামলায় হাইকোর্ট বিভাগের রায় প্রদানের পরে সুপ্রিম কোর্ট লক্ষ করেছেন যে সংসদ সদস্যরা রায়ের সমালোচনা করে সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন। রায় এবং বিচারকদের শুদ্ধতা নিয়ে অসংসদীয় ভাষায় প্রশ্ন তুলেছেন। এটা প্রমাণ করে যে আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্র অপরিপক্ব।’
রায়ে বলা হয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানিকালে যুক্তি দিয়েছেন যে যদি কতিপয় বিচারক হতে আগ্রহী ব্যক্তি নিজেদের ‘খুব উঁচু, খুব বড়’ এবং ‘জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ’ বলে গণ্য করেন, তাঁদের বিচার বিভাগে স্বাগত জানাই না। তাঁরা এমনকি চলে যেতে পারেন। আজমালুল হোসেনও তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন। এম আমীর-উল ইসলাম ইতিহাসবিদ লর্ড অ্যাক্টনের বরাতে বলেছেন, সকল ক্ষমতা দুর্নীতিগ্রস্ত। কিন্তু নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিরঙ্কুশভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। তাই প্রশ্ন জাগে, ক্ষমতার অনুশীলন কার নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত? ইংল্যান্ডের বিচারপতি লর্ড ড্যানিং বলেছেন, ‘কাউকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। আর আসুন বিচারকদেরই বিশ্বাস করি।’ এরপর প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, ‘বিচারকদের প্রতি অ্যাটর্নি জেনারেল অত্যন্ত নির্দয় মন্তব্য করেছেন। তিনি এবং সরকার যদি বিচারকদের ওপর ভরসা না রাখতে পারেন, তাহলে আমি বলব, তিনি ভ্রান্ত এবং তাঁর উচিত হবে তাঁর মক্কেলকে (সরকার) এই পরামর্শ দেওয়া যে এটাই যদি সরকারের ধারণা হয় যে বিচারকেরা স্বাধীন এবং পক্ষপাতহীন নন, তাহলে দেশে আস্থার আর কোনো জায়গাই থাকবে না।’ তিনি লিখেছেন, আজমালুল হোসেনও উচ্চ আদালতের বিচারকদের সম্পর্কে নির্দয় এবং অবমাননকার মন্তব্য করেছেন।
৭০ অনুচ্ছেদ
৭০ অনুচ্ছেদ সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি মনে করেন, ‘এই অনুচ্ছেদ সংসদ সদস্যদের বেদনাহত এবং অসংগতভাবে তাঁদের অধিকারকে শৃঙ্খলিত করেছে। তাই সংসদের কোনো ইস্যুতেই তাঁরা দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান নিতে পারেন না। সংবিধানের ৯৫(২)গ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো আইন না করা সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে নির্বাহী বিভাগকে একটি বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। আর ১১৫ ও ১১৬ অনুচ্ছেদ ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় নির্বাহী বিভাগের প্রভাব পড়বে।’ তিনি লিখেছেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই, ৭০ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য হলো সরকারের স্থিতিশীলতা ও ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। দলের সদস্যদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখা।’
 প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন রেখেছেন, ‘সংসদ সদস্যদের যদি সন্দেহের চোখেই দেখা হয়, তাহলে তাঁদের কী করে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের মতো দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজে ন্যস্ত করা যায়। তাই এই অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্যের চেতনা হলো সংসদের নির্বাচিত সদস্যরা তাঁদের মনোনীত করা দলের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখবেন। আসলে তাঁরা তাঁদের দলের উচ্চপর্যায়ের হাতে জিম্মি। তাই ৭০ অনুচ্ছেদের বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগ যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছেন, তার মধ্যে আমরা কোনো বৈকল্য দেখি না। সংসদের হাতে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হলে বিচারকেরা দলের হাইকমান্ডের অনুকম্পানির্ভর হয়ে পড়বেন।’
হাইকোর্টকে ভর্ৎসনা
প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের রায়ের একটি অংশ তুলে ধরেন, যেখানে বলা হয়েছিল, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা এটা দেখাচ্ছে যে সংসদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড রয়েছে। তাঁরা দেওয়ানি মামলাসমূহের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু ষোড়শ সংশোধনীর কারণে সাংসদেরা বিচারকদের কার্যত বসে (কর্তৃত্ব অর্থে) পরিণত হয়েছেন, যা উচ্চ আদালতের বিচারকদের স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনে হুমকি সৃষ্টি করেছে। সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী সংসদের ৭০ শতাংশ সদস্য ব্যবসায়ী। মাহবুবে আলম এবং মুরাদ রেজা (অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল) এই তথ্যের বিষয়ে আপত্তি করেননি। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখতে পাই, আইন প্রণয়নসংক্রান্ত সংসদীয় বিতর্কে তাঁরা কম আগ্রহী। এর পরিণাম হলো আজকের দিনে সংসদে পাস করা বেশির ভাগ আইন ‘ত্রুটিযুক্ত’। অসম্পূর্ণ এবং ‘নিচু মানের’ আইন প্রণয়নে তাঁদের দায়িত্ব উত্তমরূপে পালনের চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হতে তাঁরা বেশি আগ্রহী হয়ে পড়েছেন। বিচারকদের অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের বিচার করা আইনপ্রণেতাদের কাজ নয়।’
প্রধান বিচারপতি এরপর মন্তব্য করেছেন, ‘সংসদ সদস্যদের বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের উল্লিখিত পর্যবেক্ষণ সম্পূর্ণরূপে অবাঞ্ছিত এবং আমরা কোনোভাবেই এ দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করি না। সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো আদালত বা বিচারকদের এ রকম অবমাননাকর মন্তব্য করা উচিত নয়। আদালত এবং সংসদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতি থাকা দরকার। একইভাবে সংসদেরও উচিত নয় সুপ্রিম কোর্টের কোনো পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য বা কটাক্ষ করা।’

WATCH ON LINE MOVIES

https://radio.net.bd/#bhumi

এ জীবনে যারে চেয়েছি |

ALL FM RADIO BANGLA & INTERNATIONAL

CLICK PIC https://radio.net.bd/#bhumi

POPULAR NEWSPAPER

Daily Prothom Alo    Amar Desh Daily Naya Diganta Daily Jai Jai Din Shamokal
Powered by Blogger.

Latest News

Blog Archive

Subscribe Here

GOOGLE SCARCH

Recent posts

Follow us on facebook

Contact Form

Name

Email *

Message *

THE LIFESTYLE

','5','featcat' );

Face book page

পিওর খেজুরের রস ১২০ টাকা

খাঁটি খেজুরের গুড় চট্টগ্রাম শহরে দিচ্ছে চাটগারা মামু

পিওর খেজুরের রস চট্টগ্রাম

On line income

আপনাদের জন্য সু-খবর, ইতিপূর্বে আপনারা, যারা ফেসবুক, টুইটার, ইন্ট্রাগ্রাম ইউটিউব এর মত, আর অনেক সোস্যাল মিডিয়া, ব্যাবহার করে আসছেন, কিন্তু আপনি বা আপনারা এর পোষ্ট দেখেন কিন্তু এর থেকে নিজেরা কোন ইনকাম করতে পারছেন না । তারা লাইক, কমেন্ট , শেয়ার ও রেফার করে অনেক টাকা আয় করতে পারবেন । একটি Web Talk একাউন্ট খোলার জন্য আপনি আমার Web talk referral Id -dewanmd.akhtarhossai রেফারেল লিংক দিয়ে আপনার একটি Web Talk অ্যাকাউন্ট তৈরি করে আপনার ফ্রেন্ড কে রেফার করে জয়েন করালে এবং আপনি লাইক কমেন্ট শেয়ার করে এখান থেকে ডলার কমিশন আয় করতে পারবেন ।, Web Talk সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো টাকা বিনিয়োগ করতে হবে না। বরং আপনি বিনা মূল্যে এখন থেকে আপনি ৫ লেবেল পর্যন্ত টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে এই ভিডিও টি সম্পূর্ণ দেখুন । নিচের দেওয়া লিংক ক্লিক করে এখনি রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন । web talk referral link https://get.webtalk.co/dewanmd.akhtarhossain Web talk referral ID - dewanmd.akhtarhossain প্রথমে নিজে রেজিস্ট্রেশন করুন। নিজের লিংক দিয়ে অন্যদের একাউন্ট করে দিন তাই আপনাদের অনুরোধ করে বলবো আর দেরি না করে শুরু করে দিন। কোন সমস্য মনে হলে আমার সাথে ইনবক্সে যোগাযোগ করুন।

Delta Life Job post

দেশের শির্ষস্থানীয় জীবন বীমা কোম্পানি ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি পরপর চারবার আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেঙ্কিং ট্রিপল AAA অর্জনকারী বীমা কোম্পানি। ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি বর্তমানে ১০ ১৫ ও ২০ বছর মেয়াদের পলিসিতে সবচেয়ে বেশি বোনাস দিচ্ছে এবং দ্রুত বীমা দাবি পরিশোধ করছে। চট্টগ্রাম এলাকায় ডেল্টা লাইফের বীমা পলিসি বাজারজাত করনের কাজকে পেশা হিসাবে গ্রহনের মাধ্যমে অধিক আয় ( ন্যূনতম ১৫০০০ হইতে ২৫০০০ হাজার টাকা ) করতে আগ্রহি স্মার্ট, সৎ, উদ্যোগী, ও আত্ম বিশ্বাসী, পুরুষ ও মহিলা প্রার্থীর নিকট হইতে নিন্ম লিখিত পদে নিয়োগের জন্য dewanctg70@gmail .com ই মেইলে দরখাস্ত আহ্বান করা যাইতেছে । ফিনান্সিয়াল এসোসিয়েট ২০ জন ইউনিট মানাজার ১০ জন ছাত্র , ছাত্রী ও গৃহিণীদের জন্য পার্ট টাই ও ফুল টাইম কাজ করার সুযোগ আছে। Branch Manager, 01818-029316 Delta life insurance Company

POPULAR PAPER HOUSE

Popular Posts

শুধু তোমাকে চাই ।

বিডি নিউজ ট্র্যাকার একটি নিউজ মিডিয়া । আমাদের জীবনে প্রয়োজনীয় নানা রকম তথ্য ,খবর ,অপ্রত্যাশিত সংবাদ,বার্তা ও বিনোদনের খোঁজখবর জাতিও ও আন্তর্জাতিক পত্রিকায় প্রকাশিত এবং নানা রকম নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হইতে সংগ্রহ করে BD NEWS TRACKER এর মাধ্যমে উপস্থাপন করে সেবা প্রদান করাই আমাদের উদ্দেশ্য ।