মায়ার জালে বন্দী নারী-পুরুষের আদরমাখা সম্পর্ক আজীবন স্বীকৃত। অনেক সময় নানা রহস্যেও সংজ্ঞায়িত হতে দেখা যায়। সময়ের সঙ্গে বদলাতে থাকে সম্পর্কের ধারা। তাই দুজনকেই চেষ্টা করতে হয় একে অপরের কাছে গুরুত্ব ধরে রাখতে। আর তাই একে অপরের কাছে আকর্ষনীয় হওয়াটাও জরুরি। আসুন জেনে নেয়া যাক, যে গুণে একজন পুরুষ নারীর কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে।
অনেকেই প্রশ্ন করেন
নারীকে আকর্ষণ
করার জন্য
কোন গুণটি
সবচেয়ে বেশি
প্রয়োজন।
নারী কিংবা
পুরুষ উভয়েরই
কাউকে পছন্দ
করার ক্ষেত্রে
কিছু নিজস্ব
ধারণা রয়েছে। কাউকে
পছন্দ করার
ক্ষেত্রে কোন
বিষয়গুলো নারী
গুরুত্ব দেয়,
তা নিয়ে
একটি গবেষণা
করা হয়েছে। এ
গবেষণার ভিত্তিতে
এতে উঠে
এসেছে এমন
কিছু বিষয়,
যা আগে
জানা যায়নি।
ব্রিটিশ সাইকোলজিক্যাল সোসাইটি
সম্প্রতি জানিয়েছে
তাদের দৃষ্টিতে
নারীর কাছে
পুরুষের কোন
বিষয়টি সবচেয়ে
আকর্ষণীয়।
এটি হলো-
পুরুষের গল্প
বলার ক্ষমতা।
ভালোভাবে গল্প বলার
এ গুণটি
পুরুষকে নারীর
নিকট আকর্ষণীয়
করে তোলে। এটি
তাদের সঠিক
রসবোধের পরিচয়
দেয় এবং
নারীরা এ
কারণে পুরুষের
প্রতি আকৃষ্ট
হয় বলে
মনে করে
ব্রিটিশ সাইকোলজিক্যাল
সোসাইটি।
একদল
ব্রিটিশ বিজ্ঞানী। গবেষণায় তারা নিশ্চিত করেন, নারীদের আকর্ষণের রহস্য লুকিয়ে
রয়েছে পুরুষের কণ্ঠস্বরের মধ্যে। তাদের দাবি, কেবল কণ্ঠ শুনেই যে কোনো পুরুষের
চেহারা কল্পনা করে নেন নারীরা।
বিজ্ঞানীরা
গবেষণা করে দেখেন, কণ্ঠস্বর মনে গভীর রেখাপাত করে। আওয়াজ শুনেই একজন নারী অচেনা
পুরুষটির শারীরিক গঠন, উচ্চতা, সেন্স অব হিউমার- এ সব আন্দাজের চেষ্টা করেন। এমনকি
টেলিফোনের উল্টোদিকের মানুষটি কতটা ফ্যাশনেবল তাও আঁচ করার চেষ্টা করেন। এখন
নিশ্চয় নারীদের অনুধাবন ক্ষমতা সম্পর্কে আপনার আস্থা জাগছে! দেখতেই পাচ্ছেন কীভাবে
কণ্ঠস্বরের রেশ ধরে পুরো মানুষটাকে কল্পনা করে নিচ্ছেন।
গবেষকদের
ব্যাখ্যা শব্দের স্পন্দন ও কণ্ঠের ওঠানামাই নাকি আসল বিষয়। ভাষা, শব্দ ও বাক্য- এ
সব বিষয় এ ক্ষেত্রে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। এবার বুঝি যতটা ভাবছেন বিষয়টা তার চেয়েও
সুক্ষ্ম!
ইউনিভার্সিটি
কলেজ অব লন্ডনের এ গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, পুরুষদের কণ্ঠ ভারী এবং নারীদের ‘হাই পিচড’
হলে সকলে তাকে আকর্ষণীয় মনে করে। এমন কণ্ঠের শ্রোতা তখন বক্তার শারীরিক গঠন কল্পনা
করে নেয় মনে মনে। শুধু তত্ত্ব নয়, গবেষকরা হাতেনাতে পরীক্ষা করে নিজেদের দাবির
প্রমাণ পেয়েছেন।
১০ জন
নারীকে ধারণ করা পুরুষ কণ্ঠ শোনানো হয়েছিল। পুরুষ কণ্ঠটি শুনে মহিলাদের বক্তব্য
রেকর্ড করা হয়। দেখা যায়, প্রত্যেকেই গলার আওয়াজ শুনে পুরুষটির শারীরিক গঠন, যৌন
আবেদন, এমনকি মুখের গড়নও আঁচ করার চেষ্টা করেছেন।
মহিলাদের
উত্তর বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা আরও কিছু প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন। যেমন, পুরুষ কণ্ঠ
ভারী হলে ও কম কাঁপলে নারীরা তা বেশি পছন্দ করে।
এ ছাড়া যে সব গুণে একজন পুরুষ নারীর কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে যেমন ,
ব্যক্তিত্বসম্পন্ন
একজন পুরুষকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে তার ব্যক্তিত্ব। তাই পুরুষ হিসেবে নিজেকে সব সময় এগিয়ে রাখতে তথ্যজ্ঞান সম্পন্ন হোন। বই পড়ুন। গবেষণা মূলক কাজ করুন। সৃজনশীল কাজে অবদান রাখার চেষ্টা করতে হবে ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠায়। এমন গুণের অধিকারী যেকোনো পুরুষই নারীর কাছে আকর্ষনীয়।
রোমান্টিক
আপনি কর্মক্ষেত্রে বড় কাজের দায়িত্বে আছেন, তাই বলে আপনার মনকে রুক্ষ করে ফেলবেন না। সময় সুযোগ এবং পরিবেশ অনুযায়ী আপনাকে রোমান্টিকও হতে হবে। তা না হলে আপনার কাছে কেউ ঘেষবে না। উচ্চ দায়িত্ব প্রাপ্ত কোনো পুরুষ যদি স্থান ভেদে রোমান্টিকও হতে পারে তবে তা নারীকে খুব আকর্ষণ করে।
শ্রদ্ধাবোধ
নারী-পুরুষ এককথায় মানুষকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে পারার ক্ষমতা একজন মানুষকে মহান করে। একজন সত্যিকারের ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন পুরুষ আশেপাশের সবাইকে যথার্থ শ্রদ্ধা দিতে পারেন। ছোট-বড়, ধনী-গরীব সকলের সঙ্গেই তার সুন্দর ও অমায়িক ব্যবহার নারীর চোঁখে আকর্ষনীয় করে তোলে। তবে সে ব্যবহার আসতে হবে মন থেকে। কারণ দেখানো আচরণ কখনো গ্রহণযোগ্য হয় না।
আত্ম-সম্মানবোধ সম্পন্ন
জীবনের প্রয়োজনে সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই। কিন্ত অন্যায়কে মেনে নেয়া কোনো সুপুরুষের কাজ হতে পারে না। পরনির্ভরশীলতা কাটিয়ে সঠিক জিনিসের প্রতিষ্ঠা করায় ব্যক্তি জীবনের যথার্থতা বয়ে আনে। আর একজন আত্ম-সম্মানবোধ সম্পন্ন মানুষই সেটা করতে পারে। এমন পুরুষকেই নারীরা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে।
কঠোর পরিশ্রমী
নারীরা কঠোর পরিশ্রমী ও ক্যারিয়ার সচেতন পুরুষকে খুবই সম্মান করে। এমন পুরুষ নারীর ভালো লাগার জায়গা দখল করতে পারে সহজেই। কারণ এমন পুরুষ জীবনে অনেক উন্নতি করতে পারে। আর নারীর কাছে সেটাই কাম্য।
অসামাজিক কাজের বিরেুদ্ধে অবস্থান
আমাদের আশেপাশে নানা রকম অসামাজিক কার্যকলাপ দেখা যায়। আর তাতে জড়িয়ে আছে তরুণ সমাজের একটা বড় অংশ। যেমন- পর্ণ ছবি দেখা, নেশা করা, অতিরিক্ত বন্ধুপ্রীতি, মেয়েদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করা। এমন স্বভাবের ছেলেরা কখনোয় নারীর পছন্দের হতে পারে না। তবে এর বিপরীতে যেসব ছেলের অবস্থান তারা নারীর চোঁখে বেশি আকর্ষণীয়। বিশেষ করে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছেলেরা আরও বেশি আকর্ষণীয়।
পরিপাটি থাকা
পুরুষের চেহারা বা বাইরের সৌন্দর্যকেও আজকাল মেয়েরা বেশ প্রাধান্য দিচ্ছে। তাদের জুতা, পোশাক, চুল-দাড়ি, হাত পায়ের পরিচ্ছন্নতা বিশেষ করে দেহের গন্ধও গুরুত্বের বিষয়। তাই ছেলেরা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি হালকা সুগন্ধিও ব্যবহার করতে পারে। যা ব্যক্তিত্ব ধরে রাখার পাশাপাশি নিজেকে মানানসই করে উপস্থাপন করতে পারে।