প্রতিনিয়ত পথ চলতে গিয়ে আমাদের অনেক মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়। আর মিশতে গিয়ে কখনও কারও সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে, আবার কখনও সম্পর্কটা বেশিদূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়না। তবে এটা কোন সমস্যা নয়। কারণ সবার সঙ্গে সবার সম্পর্ক ভালো যাবেনা এটাই স্বাভাবিক। সম্পর্কেরও টানাপোড়েন আছে। আর এটা তখনই খারাপ পরিস্থিতিতে গিয়ে দাঁড়ায় যখন আপনি ভুল বোঝাবুঝির শিকার হোন। যখন আপনি দোষ না করেও অন্যের চোখে দোষী। এ রকম পরিস্থিতিতে অন্যকে নিজের অবস্থান পরিস্কার করা তো দূরের কথা তাকে কোনকিছু বোঝানোও যায়না। এ সময় ভেঙে পড়াটা খুবই স্বাভাবিক। এমন পরিস্থিতিতে কিছু কাজ করুন যা আপনাকে সমস্যার সমাধানে সাহায্য করবে। একইসঙ্গে আপনিও নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের সুযোগ পাবেন।
এমনটি ঘটলে যা করবেন-
দোষের কারণ খুঁজুন
কেন সবাই আপনাকেই দোষারোপ করছে আগে তার কারণটা খুঁজে বের করুন। বোঝার চেষ্টা করুন, আসলেই আপনি কোনো দোষ করেছেন কিনা, নাকি সকলে আপনাকে ভুল বুঝছে। যে কাজের জন্য আপনাকে বারবার দোষী বলা হচ্ছে, সেটা নিয়ে গোড়া থেকে ভাবুন। এটা হতেই পারে যে ভুলটা আপনারই, কিন্তু তা চোখ এড়িয়ে গেছে। এমনটা হলে ক্ষমা চেয়ে নিন। আর যদি আপনার কোনো দোষই না থাকে, সেক্ষেত্রে বেশ ক’টি পদক্ষেপ নিন।
নিজেকে সামলান
এ রকম পরিস্থিতিতে অযথা ভেঙে না পড়ে নিজেকে সামলে নিন। এ সময় ঝোঁকের মাথায় এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না বা কাজ করবেন না যাতে আপনাকে পরে পস্তাতে হয়। নিজেকে অহেতুক দোষারোপ করবেন না। বেশি আক্ষেপ করলে তা আপনাকে মানসিকভাবে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করবে। মাথা ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা করুন। নিজের মধ্যে যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে তা শান্ত হওয়ার জন্য নিজেকে সময় দিন।
প্রমাণ করতে বলুন
যারা আপনাকে ভুল বুঝে দোষী সাব্যস্ত করছেন, সম্ভব হলে তাদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করুন। কথা বলে কোনো সমাধান না হলে বলুন আপনার দোষ প্রমাণ করতে। আপনি যদি আদতেই দোষী না হয়ে থাকেন তাহলে আর আপনার ভয় কী? তবে হ্যা, মিথ্যা প্রমাণাদি দিয়ে যদি আপনাকে ফাঁসানো হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে প্রমাণ করার কথা বলার চেয়ে না বলাই ভালো।
আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনুন
আপনি দোষী হন আর না হন, মিথ্যা অপবাদে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে যে কেউ। নিজের প্রতি নিজের হারানো বিশ্বাস ফিরিয়ে আনুন। এটা আপনার জন্য খুবই জরুরি। আপনি যে দোষী নন, নিজেই নিজেকে বারবার সেটা বোঝাতে থাকুন। নিজের ভালো দিকগুলোর কথা ভাবুন। লোকজনের কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখবেন না। বরং মানুষজনের সঙ্গে মিশুন এবং মন খুলে কথা বলুন। নির্ভয় হয়ে কোনো নতুন কাজ শুরু করুন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস দ্রুত ফিরে আসবে।
আত্মোন্নয়ন করুন
নিজেকে একজন সফল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আত্মোন্নয়ন করা সবচেয়ে জরুরি। আপনার সঙ্গে যেটাই ঘটে থাকুক না কেন, নিজের আত্মিক উন্নয়ন করুন। নিজের দোষ-গুণ নিয়ে ভাবুন, নিজের আত্মসমালোচনা করুন। নিজের গুণাবলিকে বিকশিত করতে সচেষ্ট হোন। নিজের ভুলগুলো শুধরে নিন। নিজেকে নিয়ে কখনোই নেতিবাচক কিছু ভাববেন না। বরং নিজের প্রতি এবং নিজের কাজের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখুন।
লোকের কথায় কান দেবেন না
যারা আপনাকে বিনা করাণেই দোষী হিসেবে চিহ্নিত করছে, তারা স্বভাবতই আপনাকে বোঝে না। যারা আপনাকে বোঝে না, বিপদে আপনার পাশে দাঁড়ায় না, তাদের কথায় কান না দেওয়াই ভালো। বরং এসব মানুষদের কাছ থেকে দূরে থাাংর চেষ্টা করুন।
সুদক্ষ হয়ে উঠুন
আপনি যে ক্ষেত্রেই কাজ করুন না কেন, কাজে নিজের দক্ষতা আরো বাড়ান। একজন দক্ষ মানুষের প্রয়োজন থাকে সব জায়গাতেই। আর তার কাজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না সহজে। ফলে তাকে হঠাত্ করে দোষী বলতেও দ্বিধা করবে লোকে। তাই নিজেকে কাজ-কর্মে করে তুলুন সুদক্ষ। এর পাশাপাশি আপনার কাজে লাগবে এমন বাড়তি কিছু বিষয়েও নিজের স্কিল বাড়ান। এতে বাড়তি সুবিধা পাবেন আপনি নিজেই।
নিজেই হয়ে উঠুন নিজের অনুপ্রেরণা
নতুন কাজ করতে, নতুন দায়িত্ব নিতে নিজেকে উত্সাহিত করুন। যা হবে তা ভালোর জন্যেই হবে – এমনটা ভাবলে দেখবেন সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করছেন না। আনন্দ বোধ করেন এমন কাজের সঙ্গে জড়িত থাকুন। মহান ব্যক্তিদের জীবন সম্পর্কে জানুন, এতে আপনি অনুপ্রেরিত হবেন। আপনার পাশে যদি কেউ নাও থাকে, নিজের ওপর আস্থা রাখুন। দেখবেন আপনি একাই সব সামলে নিতে পারবেন।
আয়েশা সিদ্দিকা
শূটড়োঃ আমাদের সময় ৩০ এপ্রিল ২০১৭, ১১:৫৪ | আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০১৭, ১৪:১৪
0 comments:
Post a Comment
পাঠকের মন্তব্য আবশ্যক